ম্যানচেস্টার সিটির গোল মেশিন আর্লিং হলান্ড ও ফরাসি সুপারস্টার কিলিয়ান এমবাপ্পেকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফিফার বছরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ‘ফিফা দ্য বেস্ট’ জিতলেন মেসি। তবে স্বয়ং মেসির সবচেয়ে বড় ভক্তও সম্ভবত ভাবেননি মেসি গতকালকে লন্ডনের জমকালো অনুষ্ঠানটিতে পুরস্কারটি জিতবেন। সব বিশেষজ্ঞ ও সংবাদমাধ্যমের ইঙ্গিত ছিল পুরস্কারটি জিততে চলছেন আর্লিং হলান্ড। তবে রীতিমতো সবাইকে অবাক করে দিয়ে রেকর্ড তৃতীয়বারের মতো পুরস্কারটি নিজের করে নেন মেসি।
লন্ডনের জমকালো অনুষ্ঠানে মেসির অনুপস্থিতিই মোটামুটি সবাইকে ধারণা দিয়ে দেয় যে মেসির হাতে সম্ভবত পুরস্কারটি উঠছে না। তবে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি আর্জেন্টিনার খুদে জাদুকরের হাতেই উঠছে পুরস্কারটি। মেসি জিতলেও তার এবং হলান্ডের মধ্যে লড়াইটা কিন্তু হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। সেরা হওয়ার দৌড়ে দুজনের পয়েন্ট ছিল একেবারেই সমানে সমান। সমান ভোট হওয়ার পরেও মেসির হাতে পুরস্কার ওঠায় বেশ আলোচনা শুরু হয়। পরে অবশ্য ফিফা জানায় মেসির হাতে পুরস্কার ওঠার পেছনে কারণ।
ফিফা দ্য বেস্ট পুরস্কারের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটিং হয়। পুরস্কারের দাবিদার প্রশ্নে পরিষ্কার ফেবারিট ছিলেন আর্লিং হলান্ড। তিনি ভোটে পান ৪৮ পয়েন্ট। মেসিও পান সমান ৪৮ পয়েন্ট। ফিফার ওয়েবসাইটের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, অধিনায়ক আর ভক্তদের ভোটে হলান্ড থেকে এগিয়ে ছিলেন মেসি। অন্যদিকে কোচ এবং সাংবাদিকদের ভোট ছিল হলান্ডের দিকে। অধিনায়কদের ৬৭৭ পয়েন্টের ভিত্তিতে মেসি জুরি বোর্ড ঘুরে পেয়েছেন ১৩ স্কোরিং পয়েন্ট। হালান্ড অধিনায়কদের ভোটের ভিত্তিতে পেয়েছেন ১১ পয়েন্ট। তার পক্ষে ছিল ৫৫৭ পয়েন্ট।
কোচ এবং মিডিয়ার পক্ষ থেকে পাওয়া ভোটের ভিত্তিতে হলান্ড পান ১৩ পয়েন্ট। মেসি সেখানে পান ১১ পয়েন্ট। আর ভক্তদের পক্ষ থেকে পাওয়া ভোটের ভিত্তিতে মেসির ১৩ পয়েন্টের জায়গায় হলান্ডের ছিল ১১ পয়েন্টে। এখানে অবশ্য বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
দুজনের ভোট সমান হওয়ায় পুরস্কারটির ভাগ্য নির্ধারিত হয় জাতীয় দলের অধিনায়কদের ভোটে। আর এতেই হলান্ডকে পেছনে ফেলেন মেসি। অধিনায়কদের প্রথম পছন্দের তালিকায় এগিয়ে থাকায় মেসির হাতে উঠে বর্ষসেরার পুরস্কার। ফিফার ‘রুলস অব অ্যালোকেশন’ এর ১২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত। যেখানে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ সংখ্যক পাঁচ পয়েন্ট ভোট বা প্রথম স্থানের অধিকারীই হবেন বর্ষসেরা।
আর এই অদ্ভুত শর্তেই ব্যাপক ব্যবধানে এগিয়ে যান লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে যেখানে ১০৭ বার প্রথম স্থানে দেখা গিয়েছে, সেখানে হালান্ড প্রথম স্থান দখল করেন মাত্র ৬৪ বার। আর এতেই নির্ধারিত হয় মেসির হাতে রেকর্ড তৃতীয়বার ফিফা দ্য বেস্ট যাওয়া। সবমিলিয়ে ফিফার বর্ষসেরা তিনি হলেন ৮ বার।